বালাদেশের চিকিৎসা সেবার মান বরাবরই ভালো কিন্তু সেটা আন্তর্জাতিক মানের কি-না তা কেউই বলে না। ফলে, এক শ্রেণীর মানুষ অযাথা দেশে টাকা নষ্ট না করে তারা সরাসরি বিদেশে চলে যায়। যাদের টাকা একটু কম তাদের প্রথম পছন্দের তালিকায় ভারত। প্রতিবছর লক্ষ লক্ষ মানুষ ভারতে চিকিৎসার জন্য যায়। এর পরেই আছে থাইল্যান্ড, সিঙ্গাপুর ও মালয়েশিয়ার নাম। বাংলাদেশ থেকে বিদেশে চিকিৎসার জন্য মানুষের সংখ্যা প্রতি বছরই বাড়ছে। বিদেশে যাবার এই তালিকায় সরকারের মন্ত্রী, এমপি, ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও বিত্তবান নিম্নবিত্ত সব শ্রেণীর মানুষই আছে। দেশের চিকিৎসাব্যবস্থার প্রতি তাদের নূন্যতম আস্থা আছে বলে মনে হয় না। সামান্য সর্দিজ্বর হলেও তাদের অনেকেই যখন তখন বিদেশ চলে যান।
কিন্তু বৈশ্বিক করোনা-কারণে ইচ্ছা থাকা সত্বেয় এখন তারা হর-হামেশা বিদেশে চিকিৎসা সেবার জন্য যেতে পারছে না। ফলে ভিআইপি রোগীরা গণহারে মারা যাচ্ছে বলে সবমহলেই ব্যাপকভাবে প্রতিয়মান হচ্ছে। ভিআইপিদের এই বিদেশে চিকিৎসা করতে না যেতে পারার কারণে কিছু বিয়োগান্তক ঘটনা বেশী ঘটলেও দু’টো বাস্তব বিষয়ে জনমনে দাগ কেঁটেছে। তার একটি হলো দেশের চিকিৎসার মান নিম্নমান থেকে উন্নতমান করা। পাশাপাশী বিদেশে চিকিৎসার নামে দেশের কষ্টার্জিত বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রার অপচয় বা পাচার রোধ করা।
দেশ থেকে প্রতি বছর বিপুলসংখ্যক রোগী চিকিৎসা নিতে বিদেশ চলে যাচ্ছেন, যা প্রমাণ করে আমাদের দেশে চিকিৎসাব্যবস্থার প্রতি তাদের আস্থা নেই। অনেক চিকিৎসক সরাসরি রোগীদের সাথে কথা বলেন না। রোগীর কথা মনোযোগ দিয়ে শোনেন না। এতে চিকিৎসক ও রোগীর সম্পর্কের ঘাটতি দেখা দেয়। চিকিৎসকরা রোগীর কনফিডেন্স আনতে পারছেন না। রোগনির্ণয়ে নির্ভুল পরীক্ষা একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। আমাদের দেশে ডায়াগনস্টিক টেস্টের মান ভালো না হওয়ায় অনেক সময় চিকিৎসক রোগনির্ণয়ে ব্যর্থ হন।
স্বাস্থ্য অর্থনীতিবিদদের মতে, চিকিৎসার মাধ্যমে বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা বিদেশে চলে যাচ্ছে। কিন্তু এ পরিস্থিতি উত্তরণের জন্য কর্তৃপক্ষের কোনো নীতিমালা এবং কৌশল নির্ধারণ করা নেই। এমনকি জাতীয় পর্যায়ে বিদেশগামীদের বিষয়ে কোনো তথ্যও সংরক্ষণ করা নেই।